সিপিআর কি?
কোনো কারণে যখন হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুসের স্বাভাবিক কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যায়, তখন সাময়িকভাবে হূৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কাজ কিছু সময় চালিয়ে মস্তিষ্কে রক্ত এবং অক্সিজেন সরবরাহ করাকে বলে ‘কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন’ (Cardio pulmonary resuscitation) বা সিপিআর। অন্যভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম ভাবে হূৎপিণ্ড এবং ফুসফুসের স্বাভাবিক কার্যকলাপ চালু রাখাকে সিপিআর বলে।
সিপিআর মূলত তিন পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকেঃ
- মুখ থেকে মুখে
- মুখ থেকে নাকে।
- মুখ থেকে নাকে ও মুখে।
সিপিআর করার পূর্বে বা ঐ সময় দ্রুত যে ব্যাপারগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিৎ সেগুলো হল -
- রোগীর জ্ঞান আছে কিনা।
- জ্ঞান না থাকলে তার শ্বাসনালী খুলে দিতে হবে।
- এরপর Feel, Look ও Listen এর মাধ্যমে রোগীকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
- রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে রিকভারি পজিশনে শুইয়ে দিতে হবে।
- জ্ঞান না থাকলে সিপিআর প্রয়োগ করতে হবে।
- রোগীর বয়স বেশি হলে বুকে বেশি চাপ দেওয়া যাবে না।
শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে প্রথমেই অন্ততপক্ষে ৫ বার কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুর বুকের মাঝখানে দুই আঙ্গুল রেখে মিনিটে অন্তত ১০০-১২০ গতিতে ৩০ বার চাপ দিতে হবে এবং এর গভীরতা হবে .৫-১ ইঞ্চি। এভাবে হাসপাতালে না যাওয়া বা জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত চালিয়ে যতে হবে।
প্রথমেই শিশুর সাথে কথা বলে বা কাঁধে ও পায়ের পাতায় সামান্য চাপড় দেওয়ার মাধ্যমে সে সাড়া দিচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে। যদি সাড়া দেয় তবে সে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই রেখে পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।
কিন্তু যদি শিশু সাড়া না দেয় তবে তার মাথা পেছন দিকে টেনে ধরে থুতনি উপরের দিকে তুলে ধরে শ্বাস-প্রশ্বাস পরীক্ষা করতে হবে। এবারে যদি সে সাড়া দেয় তবে তাকে রিকভারি পজিশনে রেখে পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে এবং প্রয়োজনে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
এরপরেও যদি শিশু সাড়া না দেয় তবে তার মুখের ভিতরে কোন কিছু থাকলে পরিষ্কার করতে হবে এবং কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। নিঃশ্বাস নিতে শুরু করলে শিশুকে রিকভারি পজিশনে রাখতে হবে।
যদি এরপরেও কোন শিশু সাড়া না দেয় তবে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে এবং ডি-ফাইব্রিলেটর ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে ১ বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য ডি-ফাইব্রিলেটর ব্যবহার করা নিষেধ। সিপিআর প্রয়োগ করতে হবে।বুকে ৩০ বার
চাপদিতে হবে।
চাপদিতে হবে।
- অন্ততপক্ষে ২ বার কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
- যতক্ষণ পর্যন্ত শ্বাস-প্রশ্বাস চালু না হয় ততক্ষণ বুকে চাপ ও কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
বুকে চাপ দেওয়ার নিয়মসমূহঃ
ব্যক্তির বুক বরাবর বসে এক হাতের তালুর হিল বুকের মাঝ বরাবর বসিয়ে তার উপর সবল হাত বসিয়ে আঙ্গুলের মাধ্যমে আটকে দিতে হবে। এসময় হাত সোজা রেখে কাঁধ থেকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। নিচের দিকে খাড়াভাবে চাপ দিয়ে বুকের পাঁজর ১-১.৫ ইঞ্চি নিচে নামাতে হবে যাতে হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ পড়ে। মিনিটে অন্তত ১০০-১২০ গতিতে ৩০ বার চাপ দিতে হবে এবং অন্ততপক্ষে ২ বার কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতালে না পৌঁছানো পর্যন্ত বা জ্ঞান ফেরা না পর্যন্ত এইভাবে চালিয়ে যেতে হবে।
No comments:
Post a Comment