Sunday, June 28, 2020

ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা | শেষ পর্ব

শেষ পর্বঃ
ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা:
🚩১. করল্লার রস:
💢ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে করল্লার রস
প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় করল্লার রস খেলে ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাবে,রক্তে ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়বে,অন্ত্রে গ্লুকোজের শোষণ কমে যাবে এবং রক্তে ক্ষতিকর চর্বির পরিমাণ কমে যাবে।
🚩করল্লার রসে মূল উপাদানঃ
চ্যারানটিন(Charantin),পিপিপি[Insulin like peptide(PPP)], লেকটিন(Lectin), ভাইসিন(Vicin) ,কিউকারবিটেন (Cucurbitane glycosides),মমোরডিন(Momordin) এবং স্যাপোনিন (Saponin).
🚩কীভাবে কাজ করেঃCharantin,PPP, Lectin,Vicin- এরা ইনসুলিনের মত কাজ করে।.Momordin-অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণে বাঁধা দেয়।Saponin-ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়ায়।Cucurbitane glycosides- কোষের গ্লুকোজ গ্রহণে সহায়তাকারী প্রোটিন AMPK কে সক্রিয় করে ফলে সহজেই কোষের মধ্যে গ্লুকোজ ঢুকতে পারে।
🚩মাত্রা :
প্রতিদিন ১০০মিলি করল্লার রস সমান দুই ভাগে ভাগ করে দিনে দুই বার খাবেন খাওয়ার পর পর।এছাড়াও করল্লার রসের পাউডার পাওয়া যায় যা প্রতি কেজি দেহের ওজনের জন্য ১০০মিগ্রা হিসাবে পরিমাণ বের করে তাকে সমান দু ভাগে ভাগ করে দিনে দু’বার ভরা পেটে খাবেন।
🚩সাবধানতা:
মাত্রাতিরিক্ত বা অন্যন্য ডায়াবেটিসের ঔষধের সাথে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। কাজেই এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
🚩2.ডুমুরের পাতা:
💢ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে
ডুমুরের পাতা:
স্পেনের গবেষকরা প্রমাণ করেছেন যে প্রতিদিন সকালে নাস্তার সাথে ডুমুরের পাতার চা খেলে ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিক রোগীদের দৈনিক ইনসুলিনের চাহিদা ১২% কমে যায় মাত্র এক মাসে। এছাড়াও ডুমুর পাতার চা পানে রক্তে ক্ষতিকর চর্বির মাত্রা কমে যায়। (সূত্র:ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন,ইউনিভার্সিটি হসপিটাল,মাদ্রিদ,স্পেন)
🚩ডুমুরের পাতার মূল উপাদান: পলিফেনল
🚩কীভাবে কাজ করেঃ
ডুমুরের পাতার চা পলিফেনল হুবহু ইনসুলিনের মত কাজ করে। জেনে নিন কীভাবে এই চা বানাবেন: -আধা লিটার পানিতে ২ টেবিল চামচ শুকনা ডুমুরের পাতার গুড়া ছেড়ে দিন।এরপর ১৫মিনিট বা তার অধিক সময় ধরে ফুটান যাতে পানির পরিমাণ অর্ধেক হয়ে যায়।এখন এই চা পান করুন নাস্তার সাথে।
🚩সতর্কতা:
মাত্রাতিরিক্ত বা অন্যন্য ডায়াবেটিসের ঔষধের সাথে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।কাজেই এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
🚩3.জিরার :
💢ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসায় জিরার ব্যবহার:
প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণা পত্রে দাবী করা হয়েছে যে জিরা ১)রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় ২)রক্তে চর্বির মাত্রা কমায় ৩)ডায়াবেটিক জটিলতার জন্য দায়ী AGE(Advanced Glycated End-product) তৈরীতে বাঁধা দেয়। কোন কোন গবেষক দাবী করেছেন জিরা’র কার্যকারিতা বহুল ব্যবহৃত ডায়াবেটিসের ঔষধ Glibenclamide(যেমন Dibenol) এর সমতুল্য।
🚩জিরার মূল উপাদান: কিউমিন অ্যালডিহাইড (Cuminaldehyde).
🚩কীভাবে কাজ করে:
👉১। জিরার কিউমিন অ্যালডিহাইড ক্ষুদ্রান্তের(পেটের নাড়ী-ভুড়ির অংশ) ভিতরের দেয়ালের কোষের আলফা-গ্লুকোসাইডেজ এনজাইমকে কাজ করতে বাঁধা দেয় ফলে পরিপাককৃত শর্করাজাতীয় খাদ্যের ওলিগোস্যাকারাইড মনোস্যাকারাইডে(গ্লুকোজ) পরিণত হতে বাঁধাগ্রস্থ হয়।
👉২। কিউমিন অ্যালডিহাইড অ্যালডোজ রিডাকটেজ এনজাইমকে বাঁধাদানের মাধ্যমে দেহের জন্য ক্ষতিকর ও ডায়াবেটিক জটিলতার জন্য দায়ী AGE(Advanced Glycated End-product) তৈরীতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।ফলে ডায়াবেটিসের নানাবিধ জটিলতা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।
🚩নিয়ম:আধা চা-চামচ সদ্য গুড়াকৃত জিরা পানি বা চায়ের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে সকালে নাস্তার আগে ও রাতের খাবারের আগে। খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা মনে রাখতে হবে যে জিরার কিউমিন অ্যালডিহাইড বাতাসের অক্সিজেনের সাথে দ্রুত বিক্রিয়া করে নষ্ট হয়ে যায়। কাজেই ঔষধীগুণ পেতে তাৎক্ষণিকভাবে গুড়াকৃত জিরাই ব্যবহার করতে হবে।
🚩সতর্কতা:
জিরা’র গুড়ার কার্যকারিতা বহুল ব্যবহৃত ডায়াবেটিসের ঔষধ Glibenclamide এর সমতুল্য হওয়ায় রক্তে দ্রুত গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।কাজেই এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
🚩4. ক্যাসিয়া বা দারুচিনি:
গবেষণায় দেখা গেছে ইনসুলিনের উপর নির্ভরশীল নয় এমন ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়মিত ক্যাসিয়া (আমাদের দেশে যেটা দারুচিনি নামে পাওয়া যায়) খেলে মাত্র ৪০ দিনের মধ্যে অভুক্ত অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা(FBS) ১৮-২৯% কমে যায়; ট্রাইগ্লিসারাইড কমে ২৩-৩০%; লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন(LDL) কমে ৭-২৭% এবং কোলেষ্টেরলের মাত্রা কমে ১২-২৬%
🚩মূল উপাদান: MHCP ও সিনামিক এসিড।
🚩কীভাবে কাজ করে:
MHCP ইনসুলিনের ন্যায় কাজ করে।আর সিনামিক এসিড PPAR-gamma কে সক্রিয় করে।এর ফলে একদিকে কোষের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমে যাওয়ায় কোষে সহজেই গ্লুকোজ প্রবেশ করতে পারে আর অন্যদিকে কোষের মধ্যে চর্বিকে প্রবেশ করিয়ে রক্তে এর মাত্রা কমিয়ে দেয়।
🚩নিয়ম:
প্রতিদিন ৩-৬ গ্রাম ক্যাসিয়া সকাল ,দুপুর ও রাতে সমানভাগে ভাগ করে খেতে হবে।এটা আপনি সরাসরি পাউডার আকারে বা স্টিক চিবিয়ে বা এটা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন।
🚩সাবধানতাঃমাত্রাতিরিক্ত বা অন্যন্য ডায়াবেটিসের ঔষধের সাথে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।তাছাড়া ক্যাসিয়াতে কুমারিনের(কুমারিন রক্ত জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয়) মাত্রা বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত সেবনে আঘাতপ্রাপ্তস্থানে রক্ত জমাট বাঁধা বাঁধাগ্রস্থ হয়।তাছাড়া যাদের রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা আছে তাদের রক্তক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে।কাজেই এসব বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
🚩5.স্যালাসিয়া বা সপ্তরঙ্গী
💢স্যালাসিয়া বা সপ্তরঙ্গী ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক Prof.Steve Hertzler এর মতে প্রতিদিন সকালের নাস্তার সাথে ১গ্রাম স্যালাসিয়া বা সপ্তরঙ্গীর নির্যাস (Salacia extract) খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে প্রায় ২৩% এবং দেহে ইনসুলিনের চাহিদা কমে ২৯%।স্যালাসিয়ার কাজ ডায়াবেটিসের ঔষধ Acarbose (যা আমাদের দেশে Gluco-A,Sugatrol,Carbos ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়) এর মত।
🚩স্যালাসিয়া , সপ্তরঙ্গীর মূল উপাদান:
স্যালিসিনল (SALICINOL) ও কোটাল্যানল (KOTALANOL)- উভয়েই অত্যন্ত শক্তিশালী আলফা-গ্লুকোসাইডেজ এনজাইমের কাজে বাঁধাদানকারী।
🚩কীভাবে কাজ করে:
শর্করাজাতীয় (ভাত,রুটি,আলু…) খাবার পরিপাককৃত হয়ে অপেক্ষাকৃত সরল শর্করা ওলিগোস্যাকারাইড ও ডাইস্যাকারাইডে পরিণত হয়।অন্ত্রের ভিতরের দেয়ালের কোষের আবরণীতে থাকা আলফা-গ্লুকোসাইডেজ এনজাইম এসব শর্করাকে ভেঙ্গে অতিসরল শর্করা বা মনোস্যাকারাইডে(যেমন-গ্লুকোজ) রূপান্তরিত করে।স্যালিসিয়ার স্যালিসিনল ও কোটাল্যানল এই এনজাইমের কার্যকারিতাকে বাঁধা দেওয়ায় শর্করাজাতীয় খাবার অতি দ্রুত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হতে পারে না।ফলে খাওয়ার পর পর দ্রুত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে পারে না।
🚩মাত্রাঃপ্রতিদিন ১গ্রাম স্যালাসিয়া এক্সট্র্যাক্ট (নির্যাস) সকালে নাস্তার সাথে।এক্সট্র্যাক্ট না পাওয়া গেলে ৩-৬ গ্রাম স্যালাসিয়া গাছ/কাঠের গুড়া বা গুড়া দিয়ে তৈরী চা পান করলেও চলবে।
🚩সাবধানতাঃস্যালাসিয়া হাইপোগ্লাইসেমিয়া না করলেও অপরিপাককৃত শর্করার কারণে পেট ফাঁপতে পারে,পেট ভার লাগতে পারে,পেট ব্যাথা হতে পারে কিংবা ডায়রিয়া হতে পারে।
6.💢জামের বীচিতে ডায়াবেটিস নিরাময়:
আমাদের দেশে ডায়াবেটিসের ভেষজ চিকিৎসায় জামের বীচির ব্যবহার অতি পরিচিত। গবেষণায় দেখা গেছে জামের বীচি (Eugenia jambolana) ১)অভুক্ত অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় ২)মাংসপেশীর কোষে গ্লুকোজ গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং গ্লুকোজ থেকে গ্লাইকোজেনে পরিণত হওয়া তরান্বিত করে এবং ৩)রক্তে চর্বির মাত্রা কমায়।
🚩জামের বীচি,জামের মূল উপাদানঃজাম্বোলিন (Jamboline)
🚩কীভাবে কাজ করেঃ
👉১। ধারণা করা হয় জাম্বোলিন ইনসুলিন নিঃসরণ করায় বা নিজেই ইনসুলিনের মত কাজ করে
👉২। জাম্বোলিন পেশীকোষের গ্লুকোজ পরিবহণকারী প্রোটিনকে সক্রিয় করে ফলে রক্ত থেকে গ্লুকোজ সহজেই মাংসপেশীতে ঢুকে রক্তে এর মাত্রা কমায়
👉৩। গ্লুকোজ থেকে গ্লাইকোজেন সংশ্লেষণের জন্য দায়ী এনজাইমকে উত্তেজিত করে মাংসপেশী ও লিভারে এদের সঞ্চিত হতে সাহায্য করে।—এই ত্রিমুখী কার্যকলাপে ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়।
🚩মাত্রাঃজামের শুকনো বীচির গুড়া ১গ্রাম করে সকালে,দুপুরে ও রাতে খাওয়ার অব্যবহিত পূর্বে।
🚩সতর্কতা:
মাত্রাতিরিক্ত বা অন্যন্য ডায়াবেটিসের ঔষধের সাথে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।কাজেই এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
7.🚩গুরমারির পাতা
💢ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে গুরমারির পাতা:
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরমারির (Gymnema sylvestre) পাতার ব্যবহার বেশ পুরোনো।হামদর্দ এর ডায়াবেটিসের ঔষধ ‘দোলাবী’র মূল উপাদান গুরমারি।গবেষকদের বিভিন্ন গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণিতও হয়েছে।কিন্তু যেটি তারচেয়েও বেশী চমকপ্রদ তা হলো কিছু গবেষণা থেকে ধারণা করা হচ্ছে এটি ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে।যদি বিষয়টি সত্যি হয় তবে ডায়াবেটিস থেকে চিরমুক্তি পাওয়া সম্ভব।
🚩গুরমারির পাতার মূল উপাদান: জিমনেমিক এসিড (Gymnemic acid)
🚩কীভাবে কাজ করে:
জিমনেমিক এসিডের গঠনের সাথে গ্লুকোজ অণুর মিল থাকায় পরিশোষণ (absorption) কিংবা মিষ্টি স্বাদ উদ্রেক করতে(sweet taste) গ্লুকোজ কোষের যে রিসেপ্টরের সংযুক্ত হয় জিমনেমিক এসিডও সে রিসেপ্টরের সাথে প্রতিযোগিতামূলকভাবে আগে গিয়ে সংযুক্ত হয়।ফলে জিমনেমিক এসিড ও গ্লুকোজ একই সাথে উপস্থিত থাকলে গ্লুকোজের মিষ্টি স্বাদ অনুভূত হয় না এবং সঠিকভাবে অন্ত্র থেকে শোষিত হয়ে রক্তে দ্রুত যেতে পারে না।
অামি নিজেই পরীক্ষা করে দেখেছি,গুরমারির পাতা চিবিয়ে খাওয়ার পর চিনি বা গ্লুকোজ খেলে ২ ঘন্টা পর্যন্ত মিষ্টি স্বাদ অনুভূত হয় না।
🚩নিয়ম:
প্রতিদিন সকালে ও রাতে ৪০০মিগ্রা করে গুরমারি পাতার নির্যাস (extract) খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে।
ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা | শেষ পর্ব
8.💢বংশলোচন ডায়াবেটিস কমায়:
বংশলোচন বা তাবাশীর (Tabasheer) এক বিশেষ প্রজাতির বাঁশের ভিতর গিঁটে জমে থাকা তরল ক্রমান্বয়ে জমাট বেঁধে শক্ত হয়ে তৈরী হয়।বংশলোচনের মূল উপাদান অর্গানিক সিলিকা।গবেষণায় দেখা গেছে এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়,চর্বির(কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড) মাত্রা কমায় এবং লিভারের সুরক্ষা প্রদান করে। ডায়াবেটিসে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে Qurs Tabasheer বহুল ব্যবহৃত ঔষধ Glimepiride ( Amaryl, Dialon,Secrin ইত্যাদি নামে অামাদের দেশে পাওয়া যায়) চেয়েও বেশী কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।হামদর্দের জনপ্রিয় ডায়াবেটিসের ঔষধ ‘দোলাবী’র প্রতিটি ট্যাবলেটে ৯৫.৬০মিগ্রা বংশলোচন আছে।
🚩বংশলোচন , তাবাশীর মূল উপাদান: অর্গানিক সিলিকা (Silicic acid)
🚩কীভাবে কাজ করে:
বংশলোচন কীভাবে কাজ করে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা না গেলেও রক্তে এর উপস্থিতিতে লিভারে গ্লুকোজ ও চর্বি বিপাকের সাথে সংশ্লিষ্ট কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমের মাত্রার তারতম্য ঘটে।যেমনGlucose-6-Phosphatase ওFructose-1-6-biphosphatase এর মাত্রা কমে যায় এবং Hexokinase এর কার্যকারিতা বেড়ে যায়।ধারণা করা হয় বংশলোচন এসব এনজাইমের কাজকে প্রভাবিত করেই রক্তে গ্লুকোজ ও চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
🚩নিয়ম:
১-৩ গ্রাম প্রতিদিন সমান দু’ভাগে ভাগ করে দিনে ২বার খেতে হবে।
সাবধানতাঃমাত্রাতিরিক্ত বা অন্যন্য ডায়াবেটিসের ঔষধের সাথে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।কাজেই এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
9.🚩নিম পাতা
💢ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে নিম পাতার জুড়ি নেই:
নিম গাছের ঔষধি গুণের কথা আমরা সবাই জানি।নিম গাছের পাতার নির্যাস ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী।International Research Journal of Biological Sciences [Vol. 1(6), 76-79, October (2012)] থেকে জানা যায় ডায়াবেটিক ইঁদুরকে মাত্র ১ডোজ নিমের পাতার নির্যাস খাওয়ানোর পর তার রক্তে glucose এর মাত্রা কমেছে 18%,cholesterol কমেছে 15%,triglycerides কমেছে 32%,urea কমেছে 13%,creatinine কমেছে 23% এবং lipids বা চর্বি কমেছে 15%।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাতেও নিমের পাতার ডায়াবেটিস বিরোধী গুণের কথা প্রমাণিত হয়েছে যা Bangl. J. Vet. Med.(2010). 8(1): 75 – 80 তে প্রকাশিত হয়েছে।তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্যটি দিয়েছে Evidence-Based Complementary and Alternative Medicine [Volume 2011 (2011), Article ID 561625] নামক জার্নালটি।সেখানে বলা হয়েছে নিম পাতার নির্যাস ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে।এটা বাস্তব হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসকে চিরতরে বিদায় জানানো সম্ভব হবে।
🚩নিম পাতা রমূল উপাদান:
নিম পাতার নির্যাসে প্রায় ১৩৫টি ঔষধীগুণসম্পন্ন উপাদান পাওয়া গেছে।তবে গবেষকরা এখনও নিশ্চিত নন কোন কোন উপাদান ডায়াবেটিস নিরাময়ে কাজ করে।গবেষণায় দেখা গেছে নিম পাতার জলীয় নির্যাসের (aqueous extract) এর তুলনায় ক্লোরোফর্ম দ্বারা নিষ্কাষিত নির্যাসের (chloroform extract) ডায়াবেটিস নিরাময়ের ক্ষমতা অনেক বেশী।
🚩কীভাবে কাজ করে:
🚩ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার নির্যাসের কার্যকরী উপাদান নিম্নোক্ত উপায়ে কাজ করে থাকে বলে ধারণা করা হচ্ছে-
👉১। খাদ্যের শর্করাকে গ্লুকোজে রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ এনজাইম হলো অন্ত্রের গ্লুকোসাইডেজ।নিম পাতার নির্যাস অন্ত্রের এই এনজাইমের কার্যকারিতা ৩৫%-৫২% পর্যন্ত কমিয়ে দেয় ফলে পরিপাকের পর খাদ্য থেকে গ্লুকোজ খুব দ্রুত ও বেশী মাত্রায় রক্তে প্রবেশ করতে পারে না।
👉২। ইনসুলিন নিঃসরণকারী অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষের কার্যকারিতা ও সংখ্যা বৃদ্ধি করে।
👉৩। রক্তে প্রবেশের পর অতিরিক্ত গ্লুকোজ বিভিন্ন কোষে প্রবেশ করে গ্লাইকোজেন আকারে জমা হয় ফলে রক্তে মাত্রাতিরিক্ত গ্লুকোজের উপস্থিতি থাকে না।গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেনে রূপান্তরে glucose-6-phosphate dehydrogenase এনজাইম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।ডায়াবেটিসে এই এনজাইমের কার্যকারিতা বেশ কমে যায়।নিম পাতার নির্যাস এই এনজাইমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
👉৪। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতিতে বিটা কোষ থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়।কিন্তু সেরোটোনিন ইনসুলিন নিঃসরণে বাঁধা সৃষ্টি করে।নিম পাতার নির্যাস সেরোটোনিনের কাজে বাঁধা দেওয়ার মাধ্যমে ইনসুলিনের স্বাভাবিক নিঃসরণ বজায় রাখে।
🚩নিয়ম:
ডায়াবেটিসে কার্যকরী নিম পাতার উপাদান খুব ধীরে ধীরে পানি ও ক্লেরোফর্ম দ্রবণে বের হয়ে আসে। যেহেতু chloroform extract ঘরে করা সম্ভব নয় (যদিও এটি ডায়াবেটিস নিরাময়ে সবচেয়ে কার্যকরী) তাই আপনাকে নিম পাতার জলীয় দ্রবণেই এর কার্যকরী উপাদানকে বের করে আনতে হবে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক (অভিজ্ঞ হেকিম/কবিরাজ কর্তৃক নির্দেশিত) তাজা নিম পাতা বেঁটে তা ১০০মিলি মাঝারি মাত্রার গরম পানিতে (ফুটন্ত পানি নয়) মিশিয়ে একটি হটপটে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখে দিন।২৪ ঘন্টা পর সেটি পান করুন। এটি কেবলমাত্র সকালে নাস্তার সময় পান করতে হবে।
🚩সতর্কতা:
মাত্রাতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদী নিমের নির্যাস সেবন লিভার ও কিডনীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।নিমের তেল (বীচি থেকে প্রাপ্ত) যদিও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় তবুও এটি একটি বিষাক্ত উপাদান;এক্ষেত্রে মৃত্যঝুঁকিও রয়েছে।এছাড়াও নিম পাতা গর্ভপাত ও গর্ভনিরোধে ব্যবহৃত হয়।সুতরাং গর্ভধারণে ইচ্ছুক বা গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে এটা কোনক্রমেই ব্যবহার করা যাবে না।রক্তে ক্ষতিকর মাত্রায় গ্লুকোজ কমে যাওয়ার (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে।
10.🚩গুরমার গাছ
💢গুরমার গাছের পাতা ব্যাবহার করে দেখতে পারেন:
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই পাতা ডায়াবেটিক বা সুগার রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। গুরমারের পাতা সেবনেই অনায়াসে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় রক্তে শর্করা মাত্রা মানে সুগার লেভেল। এক মাসের মধ্যে ফল পাওয়া যাবে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
🚩গুরমার গাছ
🚩নিয়ম:
– শুকনা পাতা গুঁড়া করে খাবারের আগে খেতে হবে।
– গবেষণায় দেখা গেছে গুরমার অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে।
– বহুমূত্র বা ডায়াবেটিক রোগ দেখা দেয়ার শুরুতে এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
👉👉👉এছাড়াও শিলাজিত বা অ্যাসফল্টাম,চুকা পালং শাক,কালোজিরা,বাগান বিলাসের নির্যাস,গুরচা,মেথী,চিরতা,কাঁচা ঢেঁড়শ ইত্যাদি নানাবিধ প্রাকৃতিক উপাদানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের খুবই কার্যকরী উপাদান রয়েছে।কিন্তু সম্মানিত পাঠকদের ধৈর্য্যচ্যুতির বিষয়টি মাথায় রেখে আর্টিকেলটির কলেবর অার বৃদ্ধি করলাম না।
💢💢কিছু কথা না বললেই নয়:
1. উপরোক্ত আর্টিকেলটি কেবলই তথ্যমূলক;কোনক্রমেই তা রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লেখা হয়নি এবং সম্পূর্ন তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
2.যেহেতু এসব প্রাকৃতিক উপাদান রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় তাই এগুলোর মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণে বা অন্যন্য ডায়াবেটিক বিরোধী ঔষধের সাথে সেবন করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে ক্ষতিকর মাত্রায় গ্লুকোজ কমে যাওয়া) হতে পারে। কাজেই ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
3.রেজিস্টার্ড ভেষজ চিকিৎসক (হেকিম/কবিরাজ) এর পরামর্শ ছাড়া এসব প্রাকৃতিক উপাদান চিকিৎসায় ব্যবহার না করার অনুরোধ রইলো।

A courtesy post by:
Nutritionist & Homeopathist - Dr. Naela Siddika

আপনি গর্ভবতী তাই আমাদের উচিত আপনার ঘুম সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান বলে দেয়া

গর্ভাবস্থায় আপনার ঘুম সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান:

নিদ্রাহীনতা একটি বড় উদ্বেগ হয়ে উঠতে পারে যা মা এবং সন্তানের উভয়েরই মারাত্মক পরিণতি ঘটায়। গর্ভাবস্থার জন্য কিছু ঘুমের টিপস এখানে দেওয়া হয়েছে:
  1. মধ্যাহ্নভোজনের পরে অনেকটা সময়ের জন্য আপনাকে জাগিয়ে রাখতে পারে এমন কোন কিছু এড়িয়ে চলুন। এর মধ্যে রয়েছে এনার্জি ড্রিংকস, কফি এবং মশলাদার খাবার।
  1. উষ্ণ দুধকে দুর্দান্ত আরামদায়ক হিসাবে বিবেচনা করা হয়, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনি এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন।
এক গ্লাস গরম দুধ পান করুন
  1. নিজেকে ডিনার এবং বিছানায় যাওয়ার মাঝে বিরতি দিন, জল পানের বিষয়েও একই কথা বলা যেতে পারে। বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘন্টা আগে খাবার এবং জল উভয়ই গ্রহণ করুন। এটি হজমে সহায়তা করে এবং আপনাকে আরও ভাল ঘুমাতে দেয়।
  1. চিনির মাত্রা বেশি হওয়া আপনার সবচেয়ে খারাপ শত্রু, বিছানাইয় যাওয়ার ৪-৫ ঘন্টা আগে মিষ্টি খাওয়ার বন্ধ করুন।
  1. যেকোন স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন, এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আপনার ফোন, ল্যাপটপ এবং টিভি রাতের জন্য বিশাল স্ট্রেস ম্যাগনেট। বিছানায় যাওয়ার সময় এসব থেকে দূরে সরে যান।
  1. বাথ সল্ট এবং মোমবাতি দিয়ে একটি উষ্ণ স্নানের চেষ্টা করুন, দিনের শেষে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে মেজাজ সেট করুন।
  1. যৌনভাবে ক্রিয়াশীল থাকা জরুরী। কারণ এটি এমন রাসায়নিকগুলি মুক্তি দেয় যা আপনার শান্ত ও স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখে, এটি মানসিক চাপও হ্রাস করে এবং আপনাকে আরও ভাল ঘুমাতে সহায়তা করে।
  1. নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি ভাল বায়ুচলাচলের জায়গায় আছেন, একটি জানলা খুলে রাখুন বা এসি চালু করুন। আপনাকে ঘুমোতে বাধা দিতে পারে বলে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি একটি ভাল বায়ুচলাচলযুক্ত ঘরে আছেন।
  1. নিজেকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুন, কিছু প্রসবপূর্ব যোগব্যায়াম করুন, ধ্যান করুন এবং সংক্ষিপ্ত হাঁটাচলা করুন, এটি আপনার রক্ত ​​সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত করে।
  1. কখনও কখনও আপনার শঙ্কা, হতাশা এবং নিরাপত্তাহীনতা সম্পর্কে কেবল আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলা আপনাকে রাতে ঘুমাতে সহায়তা করে।
  1. গর্ভাবস্থায় নিদ্রাহীনতা একটি অত্যন্ত হতাশার জিনিস হতে পারে, আপনার স্বাস্থ্য বা আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি না নেওয়াই গুরুত্বপূর্ণ, যে কোন অভ্যাস গড়ে তোলা বা বন্ধ করার আগে সেগুলি নিয়ে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শের পরে করা উচিত।
শান্তির ঘুম আপনার স্বাস্থ্য এবং ভ্রূণের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি একটি ঘুমের সময়সূচী তৈরি করেছেন যা আপনাকে আপনার জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে স্বস্তিতে থাকতে ও আরামে থাকতে সহায়তা করে।
তথ্য সূত্র ও প্রকাশকাল -December 4, 2019

Friday, June 26, 2020

ডায়াবেটিস রোগীদের পরীক্ষিত খাদ্য তালিকা | প্রথম পর্বঃ

ডায়াবেটিস রোগীদের পরীক্ষিত খাদ্য তালিকা 
প্রথম পর্বঃ
👍মনে রাখবেন খাবারের অতিরিক্ত লোভ এবং আলস্য এ রোগ কে হাত ছানি দিয়ে ডেকে আনতে পারে ! ডায়াবেটিস (Diabetes) শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ Diabainein থেকে ।
🎗**** সর্বপ্রথম ১৪২৫ সালে Thomas Willis ডায়াবেটিস মেলিচীস সম্পর্কে মেডিক্যাল বইতে লেখেন। ১৭৭৬ সালে Mathew Dobson মূত্র এবং রক্তে সুগার খুজে পান। সুত্রঃ +++ (D) #3 = Diet, Drug and Discipline এই তিনটি শব্দ মনে রাখলেই আপনি প্রাথমিক পর্যায়ের ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পেতে পারেন – তার পর ও সারা পৃথিবীতে ৩০ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা আগামিতে প্রতি ৩/১ পরিবারে একজন রোগী থাকবেন । সে জন্য সকলের ভাল অভিজ্ঞতা থাকা অবশ্যই দরকার।
🎗ডায়াবেটিস দুই ধরনের রয়েছে।
👉একটা হলো ডায়াবেটিস মেলাইটাস ( সুগার বেশী হওয়া )
👉আরেকটা হলো ডায়াবেটিস ইন্সিপিডাস ( সুগার কমে যাওয়া )
👉 এ ছাড়া আরেক ধরনের ডায়াবেটিস আছে
যাকে Gestational Diabetes বলা হয় ( ইহা গর্ভবতি মায়েদের বেলায় হয় )
 ডায়াবেটিস মেলিটাস(Diabetes mellitus) একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো 'ডায়াবেটিস' বা 'বহুমূত্র রোগ'।
👉তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়।
👉ইনসুলিনের ঘাটতিই হল এ রোগের মূল কথা। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হরমোন ইনসুলিন, যার সহায়তায় দেহের কোষগুলো রক্ত থেকে গ্লুকোজকে নিতে সমর্থ হয় এবং একে শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে।
👉ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিনের কাজ করার ক্ষমতা-এর যেকোনো একটি বা দুটোই যদি না হয়, তাহলে রক্তে বাড়তে থাকে গ্লুকোজ। আর একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঘটে নানা রকম জটিলতা, দেহের টিস্যু ও যন্ত্র বিকল হতে থাকে।
💜💜 মানুষের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ সাধারণত ৩.৩ থেকে ৬.৯ মিলি.মোল/লি আর খাবার পর <৭.৮ মিলি.মোল/লি। কিন্তু যদি গ্লুকোজের পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় ৭ মিলি.মোল/লি আর খাবার পর >১১ মিলি.মোল/লি পাওয়া যায়, তবে তার ডায়াবেটিস আছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
👉👉ডায়াবেটিস মেলাইটাস আবার দু'রকম হতে পারে।
যথাঃ টাইপ-১ বা ইনস্যুলিন নির্ভরশীল এবং
টাইপ-২ বা ইনস্যুলিন নিরপেক্ষ ডায়াবেটিস।
💢টাইপ-১
+টাইপ-১ বহুমূত্র হল অটোইমিউন রোগ। এ রোগে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়।
+ তাই যাদের টাইপ-১ হয়, এদের দেহে ইনসুলিন উৎপাদিত হয় খুবই কম।
+এ জন্য রোগীকে বেঁচে থাকার জন্য ইনসুলিন ইনজেকশন বা ইনসুলিন পাম্প নিতে হয়।
+ শিশু ও তরুণদের মধ্যে এ ধরনের বহুমূত্র হয় বেশি। +১০-৩০ বছরের মধ্যে দেখা দেয়।
+ ইহা মূলত জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। এর জন্য দায়ী হল HLADR 3 এবং HLADR 4 নামক দুটি জিন ।
💢টাইপ-১ কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
👉টাইপ-১-এ অটোইমিউনিটির জন্য বিটা কোষের ধংসের কারণে এই টাইপ-১-এ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে ।
👉টাইপ-১-বি এটিও বিটা কোষের ধংসের কারণে হয়ে থাকে, কিন্তু এর সঠিক কারণ জানা যায়নি ।
(১) রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় (>130 mg/100ml)।
(২) রক্তে ছিটোনো বডির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ।
(৩) মুত্রের মাধ্যমে গ্লুকোজের নির্গমন বা গ্লুকোসুরিযা হয়।
💢টাইপ-২
👉টাইপ-২ বহুমূত্র রোগের পেছনে থাকে মূলত ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’।
👉টাইপ-২ রোগীরা শরীরে যে ইনসুলিন উৎপন্ন হয়, তাকে ব্যবহার করতে পারে না।
👉ব্যায়াম ও খাদ্যবিধির সাহায্যে একে প্রথমে মোকাবিলা করা হয়।
👉 তবে অনেক সময় প্রয়োজন হয় মুখে খাওয়ার ওষুধ, এমনকি ইনসুলিন ইনজেকশন।
👉৪০ বছর বা তারপরে এ ধরনের বহুমূত্র রোগ দেখা দেয়।
👉মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় পানীয় টাইপ-২ এর ঝুঁকি বাড়ায়।খাবারে চর্বির ধরনও গুরুত্বপূর্ণ;স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স-ফ্যাটি এসিড ঝুঁকি বাড়ায় পক্ষান্তরে পলি-আনস্যাচুরেটেড ও মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ঝুঁকি কমায়।
👉 অত্যধিক পরিমাণ সাদা ভাত খাওয়াও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
👉শারীরিক পরিশ্রম না করাও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের অন্যতম একটা কারণ।
👉বিশ্বজুড়ে ২৪৬ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগীর ৯০ শতাংশের বেশি হল টাইপ-২ ডায়াবেটিস।
🤔🤔দুই ধরনের ডায়াবেটিসই গুরুতর এবং হতে পারে শিশু ও তরুণদেরও। এ জন্য ডায়াবেটিসের বিপদ-চিহ্নগুলো জানা খুবই প্রয়োজন। ‘মৃদু ডায়াবেটিস’ বলে কিন্তু কিছু নেই।
💢সাধারণ লক্ষণাদি
👉ঘন ঘন প্রস্রাব। এ কারণে এ রোগটির নাম বহুমূত্র রোগ ;
👉অধিক তৃষ্ণা এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া ;
👉অতিশয় দুর্বলতা ;
👉সার্বক্ষণিক ক্ষুধা ;
👉স্বল্প সময়ে দেহের ওজন হ্রাস ;
👉চোখে ঝাপসা দেখা ;
👉ঘন ঘন সংক্রমণ।
💢রিস্ক ফ্যাক্টর
পরীক্ষা করে দেখা গেছে কিছু কিছু ব্যাপার ডায়াবেটিস তৈরিতে প্রভাব ফেলে।
👉১. যাদের বংশে মা-বাবা কিংবা রক্তসম্পর্কীয় নিকটাত্মীয়দের ডায়াবেটিস আছে।
👉২. যাদের শরীরের ওজন অনেক বেশি এবং যারা শারীরিক পরিশ্রম প্রায় করেনই না।
👉৩. যাদের দেহে উচ্চ রক্তচাপ এবং মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল আছে।
👉৪. যারা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করেন।
💢বৈশিষ্ট্য ও বিভিন্ন জটিলতা
👉অতিরিক্ত মেদ এ রোগের অন্যতম কারণ ;
👉উপসর্গহীনতা বা অসচেতনতার কারণে চিকিৎসার অভাব ;
👉কিডনি বা বৃক্কের অক্ষমতার অন্যতম মূল কারণ ডায়াবেটিস ;
👉অন্ধত্ব বা দৃষ্টিবিচ্যূতির অন্যতম মূল কারণ ডায়াবেটিস ;
👉বিনা দুর্ঘটনায় অঙ্গচ্ছেদের অন্যতম মূল কারণ ডায়াবেটিস।
👉ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সম্পাদনা
ইনসুলিন
👉অ্যান্টিডায়াবেটিক ঔষধ ( মুখে খাওয়ার ঔষধ )
Image may contain: one or more people, text that says '94 ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি'
Courtesy to Nutritionist & Homeopathist - Dr. Naela Siddika via মা ও শিশু স্বাস্থ্য @themomthekid
all are requested to join with our associated page at মা ও শিশু স্বাস্হ্য